উত্তর-২৪-পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ, ভারতবর্ষ
বিষণ্ণঅনুতাপে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তারা বলে,
তোমার চোখে আগুন ছিল,
তুমি কাকে দেখিয়ে জ্বালিয়েছিলে সে আলো—
তা নিয়ে কেউ জানে না।
তুমি শুধু চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিলে,
যখন রাষ্ট্র তার নিজস্ব ছায়াকে চুম্বন করছিল
এবং বলছিল,
“এই তো আমার সত্য।”
তুমি দেখলে,
হৃদয়বিহীন মুখেরা,
অঙ্গার গিলে ফেলা ভাষা নিয়ে
স্বপ্ন বোঝে নেতৃত্ব।
তাদের হাত নত ছিল না,
তাদের মাথা নত ছিল—
ভয়ে নয়, অভ্যেসে।
আর যারা কথা বলেছিল,
তাদের কণ্ঠে পতনের গন্ধ লেগেছিল বলে
তাদের নাম রাখা হয়েছিল—– রাজদ্রোহী, দেশদ্রোহী রাষ্ট্রদ্রোহী!!
তুমি লিখলে না,
তুমি উচ্চারণ করলে না,
তুমি শুধু নীরব কাগজে
একটি প্রতিচ্ছবি এঁকে দিলে—
এক ক্ষুধার,
এক কান্নার,
যা গিয়ে দাঁড়ায় নদীর শুষ্ক শয্যায়।
তারা জিজ্ঞেস করল—
“তুমি কি শত্রু?”
তুমি কিছু বললে না।
তুমি তাদের ফিরিয়ে দিলে
একটি আয়না।
তারা ভয়ে চেয়ে দেখল,
সেখানে এক উলঙ্গ রাষ্ট্র,
যার ভেতরে জেগে আছে
একটি মৃত ঈশ্বর।
শব্দগুলি ছিল না আর অস্ত্র,
তারা হয়ে উঠেছিল কাফনের মতো,
যা আচ্ছাদন নয়—
উন্মোচন।
নেতারা ভাষণে জিতল,
তুমি একা থেকে গেলে
তোমার কণ্ঠে নিঃশব্দ বিপ্লব।
আর ঠিক সেই রাতে
একটি অদৃশ্য আগুন ছড়িয়ে পড়ল শহরের বুক জুড়ে,
কেউ দেখল না তার শিখা,
কিন্তু সবাই শুনল তার শ্বাস।
সেই থেকে এক এক করে
মানচিত্র বদলাল,
কিন্তু কেউ বুঝল না
কবিতা কবে রচনা করল
রাষ্ট্রের নতুন মুখ।