আলমগীর হোসেনঃ
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে পুড়ে গেছে আটটি বসতঘর। জানা যায়, পুড়ে যাওয়া ঘরগুলো হত্যা মামলার অন্যতম আসামি লালু, সৈকতসহ তাদের আত্মীয়-স্বজনদের।
রবিবার (১৭ আগস্ট) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের হোগলাকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই সকাল ১০টার দিকে মেঘনা নদীর বড় কালীপুরা এলাকায় প্রতিপক্ষ লালু-পিয়াস গ্রুপের গুলিতে নিহত হয় গজারিয়ার শীর্ষ সন্ত্রাসী স্যুটার মান্নান। ওই ঘটনায় হৃদয় বাঘসহ ৬ জন আহত হন। পরবর্তীতে গুলিবিদ্ধ হৃদয় বাঘ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শনিবার বিকাল সাড়ে চারটার দিকে মারা যান। রবিবার বিকালে জানাজা শেষে তাকে স্থানীয় কবরস্থানে দাফন করা হয়।
জানাজা শেষে কিছুক্ষণ পর নিহত হৃদয় বাঘের সমর্থকরা প্রতিশোধ নিতে হত্যা মামলার আসামি লালু, সৈকত ও তাদের আত্মীয়দের আটটি বসতঘরে অগ্নিসংযোগ করে বলে অভিযোগ ওঠে।
অন্যদিকে হৃদয় বাঘের স্বজনরা দাবি করেন, হত্যা মামলার দায় এড়াতে লালু পক্ষের লোকজন নিজেরাই বসতঘরে আগুন দিয়েছে। তারা আগেই ঘরের আসবাবপত্র সরিয়ে নিয়েছিল।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে।
গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের ইনচার্জ মোহাম্মদ আলী রাত সাড়ে ৯টার দিকে জানান,
“অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে এমন আটটি বাড়ি আমরা পেয়েছি। এর মধ্যে পাঁচটি পুরোপুরি পুড়ে গেছে এবং বাকি তিনটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে তবে সম্পূর্ণ নির্বাপনে আরও কিছু সময় লাগবে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে বলা যাচ্ছে না, তদন্ত শেষে বিস্তারিত বলা যাবে।”
স্থানীয় ইউপি সদস্য আমিরুল ইসলাম বলেন,
“লালু একজন চিহ্নিত সন্ত্রাসী। মান্নান ও হৃদয় বাঘ হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড সে-ই। তার অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ ছিল। এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিশোধ নিয়েছে কি না, আমি নিশ্চিত নই।”
অন্যদিকে লালুর মা সানোয়ারা বেগম অভিযোগ করে বলেন,
“হামলাকারীরা লালু, লালুর বড় ভাই সানাউল্লাহ, সাইফুল্লাহ, ছোট ভাই হেদায়েতুল্লাহ ও শ্বশুর জহিরুল ইসলামের ঘরসহ মোট আটটি ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস আসার আগেই সব জ্বলে ছাই হয়ে যায়। তারা পরিকল্পিতভাবে আমাদের পুরো পরিবারকে আগুনে পুড়িয়ে মারতে চেয়েছিল।”
বিষয়টি নিয়ে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, “খবর পেয়ে আমরা ও সেনাবাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেছি। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক।”
এ সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল আলম জানান,
“আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। তদন্ত শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”