জনপ্রিয় নায়িকা অঞ্জনার মৃত্যুর দুই দিনের মাথায় আরেক শক্তিমান অভিনেতা হারালো দেশের চলচ্চিত্র অঙ্গন; অনন্তলোকে পাড়ি জমালেন প্রবীর মিত্র।
রোববার রাত ১০টা ১০ মিনিটে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার মৃত্যু হয় বলে জানিয়েছেন পুত্রবধূ সোনিয়া ইয়াসমিন।
চার দশক রুপালী পর্দায় অভিনয় দিয়ে দর্শকদের মন জয় করা জাতীয় পুরস্কার পাওয়া এ অভিনেতার বয়স হয়েছিল ৮৪ বছর।
নানা শারীরিক জটিলতা নিয়ে প্রবীর মিত্র গত ২৩ ডিসেম্বর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
ফুসফুসের সংক্রমণ ও রক্তক্ষরণের কারণে বর্ষীয়ান এই অভিনেতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হচ্ছিল বলে শনিবার জানিয়েছিলেন সোনিয়া।
রোববার রাতে কান্না জড়ানো কণ্ঠে বললেন, “বাবা আর নেই। আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।”
হাড়ক্ষয়সহ (অস্টিওপরোসিস) বার্ধক্যজনিত নানা রোগে কয়েক বছর ধরেই চার দেওয়ালে বন্দি জীবন কাটছিল প্রবীণ এই অভিনয়শিল্পীর।
প্রবীর মিত্রের পরিবার থেকে জানানো হয়েছে, রাতে তার মরদেহ ফ্রিজিং গাড়িতে রাখা হবে ধানমন্ডির বাসায়। সোমবার জোহরের নামাজের পর এফডিসিতে প্রথম জানাজা হবে। এরপর চ্যানেল আইয়ে দ্বিতীয় জানাজা শেষে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে তাকে।
স্কুলজীবনে প্রথমবারের মতো রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ডাকঘর’ নাটকে প্রহরীর চরিত্রে অভিনয় করেন প্রবীর মিত্র। পরবর্তী সময়ে পরিচালক এইচ আকবরের হাত ধরে ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে বড়পর্দায় অভিষেক হয় তার।
প্রায় চার দশকের অভিনয়জীবনে ‘তিতাস একটি নদীর নাম’, ‘দুই পয়সার আলতা’, ‘বড় ভালো লোক ছিল’, ‘বেদের মেয়ে জোসনা’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেন তিনি।
সবশেষ এসডি রুবেলের পরিচালনায় ‘বৃদ্ধাশ্রম’ নামে একটি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন তিনি।
১৯৮২ সালে মুক্তি পাওয়া মোহাম্মদ মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ে জন্য পার্শ্ব অভিনেতা হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান প্রবীর মিত্র; ২০১৮ সালে পান আজীবন সম্মাননা।
১৯৪০ সালে চাঁদপুরে জন্ম নেওয়া প্রবীর মিত্রের শৈশব কেটেছে পুরান ঢাকায়। পড়াশোনা করেন সেন্ট গ্রেগরি হাইস্কুল ও জগন্নাথ কলেজে (বর্তমানে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়)।
তার তিন ছেলে ও এক মেয়ে। স্ত্রী অজন্তা মিত্রকে ২০০০ সালে হারানোর পর ২০১২ সালে ছোট ছেলে আকাশও পরপারে পাড়ি জমান।