বুধবার , ৬ আগস্ট ২০২৫ | ২রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আবহাওয়া
  7. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  8. কলাম
  9. কৃষি
  10. খুলনা বিভাগ
  11. খেলাধুলা
  12. গজারিয়া
  13. গণমাধ্যম
  14. চট্টগ্রাম বিভাগ
  15. জাতীয়

সারজিস-হাসনাতদের হঠাৎ কক্সবাজারে যাওয়াকে ঘিরে সন্দেহ-কৌতূহল

প্রতিবেদক
সভ্যতার আলো ডেস্ক
আগস্ট ৬, ২০২৫ ১:৪৬ পূর্বাহ্ণ

বাংলাদেশে জুলাই গণ অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তির দিনে জাতীয় নাগরিক পার্টি’র (এনসিপি) বেশ কয়েকজন কেন্দ্রীয় নেতার হঠাৎ কক্সবাজারে যাওয়াকে কেন্দ্র করে কৌতূহল সৃষ্টি হয়েছে।

এই আলোচনায় ঘি ঢেলে দিয়েছে স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমের খবরে দাবি করা হয়েছে, ঢাকায় নিযুক্ত সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠক করতেই তারা কক্সবাজারে গিয়েছেন। তবে অস্বীকার করে খবরটি “গুজব” বলে দাবি করেছেন এনসিপি নেতারা।

“এটা টোটালি একটা গুজব, মিস ইনফরমেশন। এ ধরনের কোনো কিছুই না,” কক্সবাজার থেকে বলছিলেন দলটির মূখ্য সংগঠক নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারী।

“হুট করে ঘুরতে আসছিলাম, পদযাত্রাতে টায়ার্ড হয়ে গেছিলাম। জাস্ট এমনে একটু সাগর পাড়ে ঘুরতে আসছিলাম। বাট এখানে আইসা দেখি, হোটেলে চেক ইন করে মাত্র বসছি, এর মধ্যেই এই নিউজ দেখতেছি,” বলেন মি. পাটওয়ারী।

এনসিপি’র আরও যেসব কেন্দ্রীয় নেতা তার সঙ্গে কক্সবাজার গেছেন, তাদের মধ্যে দলটির উত্তরাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলের দুই মূখ্য সংগঠক সারজিস আলম এবং হাসনাত আবদুল্লাহও রয়েছেন।

এছাড়াও রয়েছেন সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব তাসনিম জারা এবং তার স্বামী খালেদ সাইফুল্লাহ, যিনি এনসিপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক পদে রয়েছেন। মঙ্গলবার সকালে তারা বিমানে করে কক্সবাজার পৌঁছান।

এমন একটি সময়ে এনসিপি’র এসব নেতারা কক্সবাজারে গিয়েছেন, যখন সরকারি উদ্যোগে ঘটা করে সারা দেশে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম বর্ষপূর্তি পালন করা হচ্ছে।

এদিন ঢাকায় জাতীয় সংসদ ভবন এলাকায় আয়োজিত অনুষ্ঠানে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ পাঠ করা হয়, যেখানে রাজনৈতিক দলগুলোর নেতারাও অংশ নেন। এছাড়া বিএনপি, জামায়াত সহ বড় দলগুলোকে আলাদাভাবে র‍্যালিও বের করতে দেখা গেছে।

কিন্তু শেখ হাসিনার সরকার পতনের আন্দোলনে সারা সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন, গণঅভ্যুত্থানের একবছর পূর্তির দিনে সেই হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম, নাসিরুদ্দীন পাটওয়ারীদের কক্সবাজারে যাওয়ার ঘটনায় অনেকের মনে সন্দেহের জন্ম দিয়েছে।

বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করা হলে জবাবে মি. পাটওয়ারী বলেন, “আমাদের দলের প্রেসিডেন্ট, সেক্রেটারির দাওয়াত কার্ড এসেছে। অ্যাজ ফার আই নো, দলের পক্ষ থেকে আমাদের একটা প্রতিনিধি দল সেখানে যাবে…প্রত্যেকটি দল থেকে ছোট ছোট প্রতিনিধি দল যাচ্ছে, আমাদেরও তাই।”

সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে বৈঠকের পরিকল্পনায় কক্সবাজার যাননি দাবি করে এনসিপি’র এই মূখ্য সংগঠক বলেন, “এরকম হলে তো আমরা ঢাকাতেই দেখা করতে পারতাম। যদি দেখা করার ইচ্ছা থাকতো।”

পরে আরেকটি ভিডিওতে দেখা যায় যে, তারা সবাই আবার হোটেল থেকে বিমানবন্দরে ফিরে আসছেন।

পিটার হাস ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ঢাকায় মার্কিন রাষ্ট্রদূত ছিলেন।

বর্তমানে তিনি মার্কিন একটি বহুজাতিক কোম্পানি এক্সিলারেট এনার্জির কৌশলগত উপদেষ্টা হিসেবে কর্মরত, বাংলাদেশে যাদের ব্যবসা রয়েছে। সেই সূত্রে তাকে প্রায়ই দেশটিতে আসতে হয়।

পুলিশ কী বলছে?

মঙ্গলবার এনসিপি নেতারা কক্সবাজারে পৌঁছানোর পর সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের সঙ্গে তাদের বৈঠক নিয়ে খবর প্রকাশ করে স্থানীয় একাধিক গণমাধ্যম।

এ ঘটনার পর এনসিপি নেতারা যে হোটেলে উঠেছেন, সেটির সামনে ভিড় করতে শুরু করেন সাংবাদিক ও উৎসুক জনতা।

খবর পেয়ে স্থানীয় থানার পুলিশ কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে যান।

“এখানে এসে আমরা জানতে পেরেছি যে, এনসিপি’র কিছু নেতা হোটেলটিতে উঠেছেন। তারা বলছেন, ঘুরতে এসেছেন,” বলছিলেন কক্সবাজারের উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা  আরিফ হোসাইন।

এনসিপি নেতাদের সঙ্গে কথা বলার পাশাপাশি পিটার হাসের বিষয়েও খোঁজ নিয়েছেন বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।

“আমরা হোটেলের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা জানিয়েছে, পিটার হাস বা অন্য কোনো বিদেশি নাগরিক আজকে তাদের হোটেলে আসেননি। গেস্টদের তালিকাতেও আমরা পিটার হাসের নাম দেখিনি,” বলেন মি. হোসাইন।

হাসনাত-সারজিসদের কক্সবাজারে যাওয়াকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনার এই ঘটনার আগের দিন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আরেক ছাত্রনেতা ও অন্তর্বর্তী সরকারের তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের একটি ফেসবুক পোস্ট জনমনে কৌতুহল তৈরি করেছিল।

গত সোমবার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক একাউন্টের পোস্টে মি. আলম লেখেন, “১/১১ এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে।”

এর কিছুক্ষণ পর পোস্টটিতে আরো কিছু শব্দ যোগ করে লেখেন, “১/১১ এর পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে! তবে জুলাই জয়ী হবে। জনগণের লড়াই পরাজিত হবে না।”

এই পোস্ট ঘিরে নানান আলোচনা-সমালোচনা শুরু হওয়ার একপর্যায়ে সেটির একটি ব্যাখ্যা তুলে ধরেন তথ্য উপদেষ্টা।

মূল ফেসবুক পোস্টের কমেন্টে মি. আলম লেখেন, “১/১১ এর পদধ্বনির কথা কেন বলসি? জুলাইয়ের শক্তিগুলোর ঐক্য নাই এবং এ ঐক্য ধরে না রাখার ক্ষেত্রে আমাদের যতটা দায়, তারচেয়ে বেশি পুরাতন ১/১১ শক্তিগুলোর অন্তর্ঘাতক কর্মকান্ড দায়ী।”

“জুলাইয়ের শক্তিগুলোর আত্মতুষ্টির সুযোগে পুরাতন ১/১১ পন্থীদের বিভাজন এবং অন্তর্ঘাতের সুযোগ বৃদ্ধি। আওয়ামী লীগকে স্বাভাবিকীকরণ এবং জুলাইয়ের ছাত্র-জনতাকে ভিলিফিকেশন মূলধারা হয়ে উঠসে। পুরাতন অর্থনৈতিক এবং কালচারাল বন্দোবস্ত ফিরিয়ে আনার তোড়জোড়, যার পথ ধরে লীগকে ফিরিয়ে আনার পথ প্রশস্ত হবে।”

উপদেষ্টা মি. আলম মন্তব্যের ঘরে আরো লেখেন, “ক্ষমতার দ্বন্দ্বে দলগুলো নিয়ে জনগণের মধ্যে আস্থাহীনতা তৈরি এবং বিরাজনীতিকরণের পুরাতন প্রচেষ্টা। রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যর্থ দেখিয়ে জনগণের মধ্যে হতাশা তৈরি এবং হতাশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্যাভিওর ক্রাইসিস তৈরির প্রচেষ্টা।”

“জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানকে অন্য দশটা ইভেন্টের মত বানিয়ে জনগণ বিশেষ করে ছাত্রদের মধ্যে হীনম্মণ্যতা তৈরির প্রচেষ্টা। জুলাইয়ের পক্ষের শক্তিকে ধীরে ধীরে অরাজকতাকারী অযোগ্য, ব্যর্থ হিসাবে উপস্থাপনের মাধ্যমে জুলাইয়ের সম্ভাবনা নাকচ করে দেয়া”।

“নির্বাচন নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি, যেখানে সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে নির্বাচন নিয়ে উল্লেখযোগ্য টানাপোড়েন নেই। রাজনৈতিকতার অবসান, বিরাজনীতিকরণের প্রচেষ্টা, রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে হতাশা তৈরি এবং স্যাভিওর ক্রাইসিস তৈরি- সবই ১/১১ এর পুনরাবৃত্তির প্রচেষ্টা হিসাবে উল্লেখ্য,” লেখেন মাহফুজ আলম।

তবে পরে মি. আলম ব্যাখ্যা সহ পুরো পোস্টটিই সরিয়ে নেন। কিন্তু কেন সেটি সরিয়ে নেওয়া হলো, তা তিনি পরিষ্কার করেননি। সূত্র: বিসিসি বাংলা

সর্বশেষ - মুন্সীগঞ্জ

আপনার জন্য নির্বাচিত