কোভিড সংক্রমণে ‘ঊর্ধ্বগতি’ দাবি করে ট্রেনে ঈদ ফিরতি যাত্রায় মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। মাওয়া স্টেশনেও এই সর্তকতার কথা জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে দেড় বছরের মধ্যে কোভিডে প্রথম একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
কোরবানির ঈদ উদযাপন শেষে ফেরার সময় ট্রেনের সব যাত্রীকে মাস্ক পরার পাশাপাশি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার অনুরোধ জানিয়েছে রেলপথ মন্ত্রণালয়।
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় খবরে রোববার এক বিজ্ঞপ্তিতে এ অনুরোধ জানিয়েছে মন্ত্রণালয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, “সম্প্রতি কোভিড-১৯ সংক্রমণ হারের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনা করে জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় সকলকে মাস্ক পরার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। বিশেষত বয়স্ক ও অসুস্থ ব্যক্তিদের এ ধরনের স্থান এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।”
পাঁচ বছর আগে ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর প্রথম চীনে ছড়ানো করোনাভাইরাস দুই মাস পর ছড়িয়েছিল বাংলাদেশেও। এরপর নানা উদ্বেগ আর আতঙ্কের মধ্যে মাস্ক পরাসহ ধাপে ধাপে কঠোর স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয় টানা তিন বছর।
সেসময় লকডাউনে জনশূন্য হয় নগর, শহর। অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজের কার্যক্রম চলে অনলাইনে। চাকরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়ে মানুষ।
সীমান্ত সংযোগ ও বিমানবন্দরে চলে কঠোর কড়াকড়ি, স্থগিত রাখা হয় আকাশ যোগাযোগ। বিশ্বব্যাপী সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ে, ডলারের দাম বাড়ে, বেড়ে যায় নিত্যপণ্যের দামও।

মুন্সীগঞ্জে মাওয়া রেলওয়ে স্টেশন । -সভ্যতার আলো
সেইসঙ্গে হাসপাতালগুলো ভরে যায় কোভিড রোগীতে, ঘটে প্রাণহানি। বছর তিনেক এ অবস্থা চলার পর কোভিডের সংক্রমণ কমতে থাকলে ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হতে শুরু করে।
সম্প্রতি সেই ভাইরাসের নতুন ধরন ‘এনবি.১.৮.১’ এর সংক্রমণ বাড়ার খবর মিলছে। ভারতের কেরালা, গুজরাট, পশ্চিমবঙ্গ ও দিল্লিকে এখন ‘সংক্রমণের হটস্পট’ ধরা হচ্ছে। দেশটিতে শুক্রবার পর্যন্ত সংক্রমণ ৫ হাজার ছাড়িয়েছে। সেদিন ২৪ ঘণ্টার হিসেবে ভারতে ৭৬৪ জন আক্রান্ত ও ৪ জন মারা গেছে।
এ অবস্থার মধ্যে বাংলাদেশেও কোভিড আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার ঢাকায় একজনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। বাংলাদেশে দেড় বছরের মধ্যে কোভিডে মৃত্যুর প্রথম ঘটনা এটি।
সংক্রমণ যাতে না বাড়ে সেজন্য জনসমাগম স্থানে মাস্ক পরতে জনসাধারণের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, দেশে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৫৯ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পাওয়া গেছে৷
২০২০ সালে করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরুর পর দেশে ১ কোটি ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ২২৪টি নমুনা পরীক্ষা করে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৭৩৯ জন রোগী শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৯ হাজার ৫০০ জনের।
২০২৪ সালে এই রোগে কেউ মারা যাননি। ২০২৩ সালে ৩৭ জন, ২০২২ সালে ১৩৬৮ জন রোগী মারা যান।
কোভিডে সবচেয়ে বেশি ২০ হাজার ৫১৩ জনের মৃত্যু হয়েছিল ২০২১ সালে। আর মহামারীর প্রথম বছর ২০২০ সালে ৭৫৫৯ জনের প্রাণ কেড়েছিল করোনাভাইরাস।