সভ্যতার আলো ডেস্ক
রাজবাড়ীতে গৃহবধূ তামান্না হত্যার বিচারের দাবী, হত্যায় জড়িত পুলিশ সদস্য স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যদের শাস্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে এলাকাবাসী।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার সময় রাজবাড়ী-কুষ্টিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের চন্দনী বাস স্ট্যান্ডে অবরোধ করে হত্যাকারীদের বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচারের দাবিতে স্কুলে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরাও অংশগ্রহণ করে এ মানববন্ধনে।
গৃহবধূ তামান্না (২৪) চন্দনী ইউনিয়নের চন্দনী গ্রামের তারেক আহম্মেদের ( রাজবাড়ী কোর্টের আইনজীবী সহকারী) মেয়ে। তামান্নার একটি ৫ বছরের পুত্র সন্তান রয়েছে।
মানববন্ধনে তামান্নার পরিবারের সদস্যরা বলেন, প্রায় ৯ বছর আগে প্রেমের সম্পর্ক মেনে নিয়ে চন্দনী গ্রামের আহম্মদ আলী মাস্টারের ছেলে পুলিশ সদস্য লিটন মাহমুদ (৩৩) এর সাথে পারিবারিক ভাবে তামান্নার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই লিটন তামান্নার পরিবারের কাছে বিভিন্ন দাবি দাওয়া করতেন। তামান্নার বাবা লিটনকে মোটরসাইকেল, আসবাবপত্রসহ নগদ টাকা দিয়েছেন ও বিভিন্ন সময় নগদ অর্থ দাবি করে আসতেন। একটা সময় পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়ে লিটন। সেই থেকে শুরু হয় সংসারে অশান্তি। তামান্নাকে বিভিন্ন সময় নির্যাতন করতেন তার স্বামী শশুর সহ পরিবারের সদস্যরা।
গত ৩ এপ্রিল সকাল ১১টার সময় তামান্নার শশুর ও তার পরিবারের সদস্যরা মিলে তামান্নাকে শারীরিক নির্যাতন করেন। পরে চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে এবং তাকে জোরপূর্বক বিষ খাইয়ে হত্যা চেষ্টা করে। ঘটনাটি প্রতিবেশীদের মধ্যে জানাজানি হলে তারা বিষয়টি অন্যদিকে মোড় দেওয়ার জন্য প্রথমে রাজবাড়ী সদর হাসপাতাল এবং পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে গত ৭ এপ্রিল দিবাগত মধ্যরাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তামান্নার মৃত্যু হয়। মৃতের সুরাত হাল রিপোর্টে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন উল্লেখ রয়েছে ও মেডিকেল সার্টিফিকেটে পয়জনিং উল্লেখ করা রয়েছে। এ ঘটনায় তামান্নার বাবা রাজবাড়ী সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ বিভিন্ন তালবাহানা দেখিয়ে মামলা নেয়নি। পরে গত বুধবার তামান্নার বাবা বাদী হয়ে রাজবাড়ী নারী শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন।
রাজবাড়ী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোঃ মাহমুদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।