বুধবার , ২৩ এপ্রিল ২০২৫ | ৩রা ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আবহাওয়া
  7. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  8. কলাম
  9. কৃষি
  10. খুলনা বিভাগ
  11. খেলাধুলা
  12. গজারিয়া
  13. গণমাধ্যম
  14. চট্টগ্রাম বিভাগ
  15. জাতীয়

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল যখন নিজেই রোগী

প্রতিবেদক
সভ্যতার আলো ডেস্ক
এপ্রিল ২৩, ২০২৫ ৬:৪৩ অপরাহ্ণ

চিকিৎসক ও নার্স সংকট

আইসিইউ ও সিসিইউ চালু হবে কবে?

মোঃ আবু সাঈদঃ

সেবার জন্য মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে আসা রোগীরা নিজেরাই এখন অসহায়। কিন্তু চরম অব্যবস্থাপনা ও সেবার মানের নিম্নগতির কারণে এ হাসপাতাল নিজেই “রোগী’-তে পরিণত হয়েছে।

হাসপাতালের প্রতিটি বিভাগে অনিয়ম এবং জনবল সংকট চরমে পৌঁছেছে। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের অভাব এবং আইসিইউ ইউনিট না থাকায় সংকট দিন দিন বেড়েই চলেছে। ২৫০ শয্যার মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে প্রয়োজনীয় সংখ্যক চিকিৎসক ও নার্স সংকটে রোগীদের কাক্সিক্ষত সেবা দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। প্রতিদিন সেবা নিতে আসা ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ রোগীকে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।

এদিকে ২০১৬ সালের নির্মিত নতুন ভবনের আইসিইউ ও সিসিইউ ব্যবস্থা থাকলেও আজ পর্যন্ত তা চালু হয়নি। আইসিইউ ও সিসিইউ সেবার অভাবে মুন্সীগঞ্জের অনেক রোগীকে ঢাকায় নেওয়ার পথে মৃত্যুও হয়েছে। সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, আউটডোরে চিকিৎসা নিতে প্রচুর রোগী ভিড় করেছেন। টিকিট কাউন্টারে তিলধারণের ঠাঁই নেই।

চিকিৎসা নিতে শহরের মালপাড়া এলাকা থেকে আসা  রোগী সালমা বলেন, ‘সেই সকাল ১০টায় এসেছি। প্রচুর ভিড়। এখন ১২টা বেজে গেছে ডাক্তার দেখাতে পারিনি। এক বছর আগে আমার বড় বোনের হার্টের সমস্যা দেখা দিলে তাকে হাসপাতালে আনা হয়। এ সময় তার শ্বাসকষ্ট হলে আইসিইউ এর অভাবে ঢাকায় নেওয়ার পথে মারা যান। হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউ যে কতটা জরুরি, সেটা আমাদের মতো ভুক্তভোগী পরিবারগুলো বুঝতে পারে।’

তিনি আরো বলেন, ‘কোটি কোটি টাকা দিয়ে হাসপাতালের আইসিইউ এর যন্ত্রপাতি আনা হয়েছে। সেগুলো চালু না হওয়ার কারণে অকেজো হয়ে পড়ে আছে। আর কতদিন আমরা চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত থাকবো।’

হাসপাতালের বিভিন্ন রোগী ও স্বজনরা বলেন, অতিরিক্ত চাপে প্রায় সময়ই রোগীদের মেঝেতে বিছানা করে থাকতে হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় সময় দিতে পারেন না চিকিৎসকরা। চিকিৎসক সংকটের কারণে চেম্বারে রোগী রেখেই ভিজিটে চলে যেতে হয় চিকিৎসককে। জনবল না থাকায় বেশিরভাগ রোগীকেই ঢাকায় পাঠানো হয়। ফলে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পথেই মৃত্যু হয় অনেক রোগীর। নতুন ভবনটি চালু করে জনবল বাড়িয়ে চিকিৎসা সেবা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন বলে জানান তারা।

জনবলের অভাবে চালু হচ্ছে না আইসিইউ ইউনিট

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট মুন্সীগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে সরকারের কোটি কোটি টাকা ব্যয় করেও শুধু জনবলের অভাবে চালু করা যাচ্ছে না  নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) এবং সিসিইউ ইউনিট। অযত্ন অবহেলায় পড়ে থেকে নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকা মূল্যের যন্ত্রপাতি। এতে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জেলার লাখ লাখ মানুষ। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে বারবার লোকবলের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের বরাবরে লেখালেখি করেও কোনো লোকবল পাওয়া যাচ্ছে না।

২০২৩ সালের ১৪ নভেম্বর করোনাকালীন সময়ে হাসপাতালের নতুন ভবনের ৭ তলায় ১০ শয্যা বিশিষ্ট আইসিইউ ইউনিটের উদ্বোধন করা হয়। ইউনিটের জন্য ভেন্টিলেটর, বেডসহ সব ধরনের যন্ত্রপাতি দিয়ে সাজানো হলেও কেবলমাত্র জনবলের অভাবে তা চালু করা যাচ্ছে না। হাসপাতালের আইসিইউ ও সিসিইউ ইউনিট ঘুরে দেখা যায়, বাইরে থেকে ধুলোবালি গিয়ে ইউনিটের ভেন্টিলেটর, শয্যাসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।

এ বিষয়ে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, “এই হাসপাতালটি খুব সম্প্রতি ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় রুপান্তরিত করা হয়েছে। আইসিইউ এবং সিসিইউ খুব যত্নশীল একটি ইউনিট। এই ইউনিট শুধু চালু করা না চালু করলে এটিকে রক্ষণাবেক্ষণও করতে হয়। চালু এবং রক্ষণাবেক্ষণ করতে হলে আমাদের সবচেয়ে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে জনবল। আমাদের এই ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের যেই পরিমাণ জনবল থাকার কথা আমরা সেই জনবল পাই নাই। পর্যাপ্ত জনবলের অভাবে আমরা আইসিইউ এবং সিসিইউ চালু করতে পারছি না।”

দালালদের দৌরাত্ম বন্ধ হবে কবে?

মুন্সীগঞ্জ জেলা শহরের একমাত্র সরকারী চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল। স্বল্প খরচে ভালো চিকিৎসা পাওয়ার আশায় দূর-দূরান্ত থেকে হাজারো মানুষ ছুটে আসে এখানে। দীর্ঘদিন ধরে বহিরাগত দালাল সিন্ডিকেটসহ বিভিন্ন বেসরকারী ক্লিনিকে প্রাইভেট চেম্বার করা মুনাফালোভী ডাক্তারদের উদাশীনতায় সু- চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সাধারন মানুষ। এমনটাই অভিযোগ হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী এবং রোগীর স্বজনদের। হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে ও আশপাশ এলাকায় গড়ে উঠেছে ২৫ থেকে ৩০টি প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। একশ্রেণির অর্থ লোভী ডাক্তার ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সমন্বয়ে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গড়ে তুলেছে বেসরকারি ক্লিনিক, ডায়াগনোস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজিক্যাল ল্যাবসহ একাধিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। আর এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ক্লিনিক গড়ে ওঠেছে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালকে ঘিরেই।

জেনারেল হাসপাতালের শয্যা সংকট ও চিকিৎসা সেবায় অব্যবস্থাপনার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে নিয়োজিত দালাল চক্র নানা প্ররোচনায় রোগী ও তাদের স্বজনদের নিয়ে যাচ্ছে বেসরকারি ক্লিনিকে ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে। এছাড়া হাসপাতাল ও চেম্বার থেকেও কমিশনের লোভে চিকিৎসকরাও বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে পাঠাচ্ছে বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও প্যাথলজি ল্যাবগুলোতে। তাই রোগীরা বাধ্য হয়ে এসব প্রতিষ্ঠানে ছুটে যাচ্ছে। আর এ কাজে সহযোগিতায় রয়েছে নিয়োজিত দালাল চক্র। দালাল নির্মূলে এমন কি পদক্ষেপ নিয়েছেন এমন প্রশ্নের জবাবে হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, “দালাল চেনা খুবই একটি চ্যালেঞ্জিং বিষয়। আমরা যখন দেখছি একই ব্যাক্তি এখানে বার বার আসছেন। চেনা মুখ হয়ে গেলে আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করি। দালাল নির্মূলে আমাদের পক্ষ থেকে যতটুকু চেষ্টা করার আমরা করছি।”

৩ মাস ধরে নেই জলাতঙ্কের প্রতিষেধক

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে মিলছে না বিনামূল্যের র‌্যাবিস ভ্যাকসিন। জেলার এই হাসপাতালে জলাতঙ্ক টিকা নিতে প্রতিদিন ভিড় করছেন শত শত রোগী। তবে প্রায় ৩ মাস ধরে মজুদ না থাকায় বিনামূল্যের টিকা পাচ্ছেন না তারা। তাদেরকে ফার্মেসি থেকে কিনে এই টিকা দিতে হচ্ছে। এতে বিপাকে পড়েছেন অনেকেই। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, জলাতঙ্কের প্রতিষেধকের সরবাহ নেই। তাই শত শত রোগী ফিরে যাচ্ছেন। সরকারিভাবে জেলায় শুধুমাত্র মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে বিনামূল্যে জলাতঙ্কের ভ্যাকসিন দেয়া হয়। তাই জেলার ছয় উপজেলার থেকেই এই ভ্যাকসিনের জন্য ভিড় করেন হাসপাতালটিতে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, মরণব্যাধি রোগটির ভ্যাকসিনের মজুদ শেষ হওয়ার আগেই সরবরাহ করা প্রয়োজন ছিল। এমন অবহেলার কারণে দরিদ্র ও নিম্নে আয়ের মানুষ জলাতঙ্ক রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বর্তমানে অনেকের বাসা-বাড়িতে পোষা বিড়াল রয়েছে। খেলতে খেলতে অনেক সময় গায়ে আঁচড় বসিয়ে দেয় এসব প্রাণী। মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে জেলা ও উপজেলা মিলে প্রতিদিন গড়ে এক থেকে দেড়’শ রোগী ভ্যাকসিনের জন্য যাচ্ছেন। এদের মধ্যে পোষা বিড়ালের মাধ্যমে আঁচড়ে আহত হওয়ার সংখ্যা বেশি।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, “র‌্যাবিস ভ্যাকসিন আমাদের হাসপাতালে সাপ্লাই নেই। এটা আশা করছি সাপ্লাইটা চলে আসবে। এটার ৫ টি ডোজ দিতে হয়। আমরা চাহিদা পাঠিয়েছি। আশা করছি খুব শিঘ্রই পেয়ে যাবো ভ্যাকসিন।”

অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও ছারপোকার আক্রমণে অতিষ্ট রোগীরা

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের রোগী এবং তাদের স্বজনরা বর্তমানে একটি অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে চিকিৎসা নিতে বাধ্য হচ্ছেন। হাসপাতালের ভেতর ও বাইরের সব জায়গায় ময়লা এবং দেয়ালে ছাড়পোকার ছড়াছড়িতে রোগীরা ভোগান্তিতে পড়ছেন। এই ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি ছয়টি উপজেলার রোগীদের পাশাপাশি আশপাশের কয়েকটি জেলা থেকেও রোগীদের সেবা প্রদান করে। তবে অব্যবস্থাপনা এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের কারণে রোগীরা চিকিৎসা নিতে এসে সমস্যায় পড়ছেন। মিরকাদিম থেকে পেটে ব্যাথা নিয়ে ভর্তি তাছলিমা আক্তার বলেন,“অধিকাংশ ওয়ার্ডে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ, যত্রতত্র খাবারের উচ্ছিষ্ট চোখে পড়ে। হাসপাতালের টয়লেট ও ওয়াশরুম পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। ওয়ার্ডের বিভিন্ন দেয়ালে এবং সংরক্ষিত জিনিসপত্র রাখার জায়গাগুলোতেও তেলাপোকার উপদ্রব দেখা যাচ্ছে।”

শহরের খালইস্ট এলাকা থেকে হাসপাতালে ভর্তি শিমুল নামের এক রোগী বলেন, “হাসপাতালের নতুন ভবনের মর্গের সামনে ময়লার স্তূপ এবং আশেপাশে ময়লার দুর্গন্ধে হাটাচলা যায় না। টয়লেট অপরিষ্কার থাকে। যত্রতত্র ময়লা থাকার কারণে পরিবেশ ঠিক থাকছে না।”

হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ আরিফুজ্জামান এমন পরিস্থিতির কথা স্বীকার করে বলেন, “ছাড়পোকাঁ বা তেলাপোকা আমরা রেগুলার বেসিসে এক একটা ওয়ার্ড ধরে পরিষ্কার করি। সব ওয়ার্ডে সবসময় রোগী থাকে। দেখা যায় ছাড়পোকাঁ বা তেলাপোকার ঔষধ দেওয়ার সময় ওয়ার্ড খালি থাকে না। আমরা চেষ্টা করি যে মৌসুমে রোগী কম থাকে তখন আমরা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে গিয়ে এই পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি। পাশাপাশি হাসপাতালকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা রাখতে চেষ্টা করি।”

কিডনী ডায়ালাইসিস চালুর দাবি

মুন্সীগঞ্জ ২৫০ শয্যার সরকারি জেনারেল হাসপাতালে কিডনি রোগীর চিকিৎসায় এখানে নেই কোনো ডায়ালাইসিস সেন্টার। ফলে বেসরকারি সেন্টারগুলোতে প্রায় নয় গুণ বেশি ফি দিয়ে ডায়ালাইসিস করাতে হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ জেলার কিডনি রোগীদের। এ অবস্থায় ডায়ালাইসিসের খরচ জোগাড় করতে হিমশিম খাচ্ছে রোগীর পরিবার ও স্বজনরা। চিকিৎসার এই ব্যয় মেটাতে গিয়েই নিঃস্ব হচ্ছে বহু পরিবার। আবার অর্থের অভাবে ডায়ালাইসিস বন্ধের পথে অনেক রোগীর। মুন্সীগঞ্জ শহরের সিপাহী পাড়া মাত্র একটি বেসরকারি ডাইয়ালাইসিস সেন্টারে কিডনি রোগীদের ডাইয়ালাইসিস সেবা দেয়া হয়। যা এখানে পর্যাপ্ত নয়। ফলে বাধ্য হয়ে রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে কিডনি ডায়ালাইসিস করাতে বাধ্য হচ্ছেন রোগীরা। এতে খরচ সময় ভোগান্তি বাড়ছে কিডনী রোগী ও স্বজনদের। অতিদ্রুত এই হাসপাতালে কিডনী রোগীদের কথা বিবেচনা করে ডায়ালাইসিস সেন্টার চালুর দাবি সচেতনমহলের।

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, “১০ বেডের একটি কিডনী ডায়ালাইসিস ইউনিট চালুর ব্যাপারে কার্যক্রম চলছে। নতুন ভবনে একটি প্রজেক্ট আকারে এই ইউনিট চালুর সম্ভাবনা রয়েছে।”

চিকিৎসক ও নার্স সংকট কাটবে কবে?

মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসক সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। চিকিৎসক সংকটে যথাযথ সেবা পাচ্ছে না রোগীরা। বাধ্য হয়ে অনেকে বেসরকারি হাসপাতাল ও জেলার বাইরে চিকিৎসা নিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বিপাকে পড়ছে গরিব মানুষ। ২৫০ শয্যার হাসপাতালটিতে সব সময়ই রোগী ভর্তি থাকে। আর প্রতিদিন বহির্বিভাগে ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ রোগী সেবা নেয়। এত রোগীর চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসকেরা। চিকিৎসক-নার্স ছাড়াও রয়েছে নানা বিভাগে জনবল সংকট। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, জ্যেষ্ঠ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মধ্যে নাক-কান-গলা, মেডিসিন, চক্ষু ও সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পদ শূন্য রয়েছে। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসাসেবায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা নার্সের পদ শূন্য রয়েছে ৪৩টি। হাসপাতালটির সহকারী পরিচালক ডাঃ মোঃ আরিফুজ্জামান বলেন, “সিনিয়র কনসালটেন্টের প্রায় সবগুলো পদই রয়েছে শূণ্য। শুধু পেডিয়াট্রিক আমাদের একজন সিনিয়র ডাক্তার আছেন। জুনিয়র কনসালটেন্টের পদ সবগুলো ফিলাপ আছে। হয়তো দুই একটি খালি আছে। এই পদগুলো ফিলাপ থাকলেও এই পদগুলো ১০০ শয্যার অনুপাতে। ২৫০ শয্যায় যেসকল ডাক্তার থাকার কথা সেই পরিমাণ নেই।”

নার্স সংকট নিয়ে তিনি বলেন, “আমাদের হাসপাতালে নার্সের পোস্ট আছে ৯৭ টি। ফিলাপ আছে ৫৮ টি। বেকেন্ড আছে ৩৯ টি। ৫৮ জনের মধ্যে কেউ হয়তো উচ্চতর ডিগ্রির জন্য কোন কোর্সে গিয়েছে কেউ হয়তো লিভে আছে। কর্মরত আছে ৩৮ অথবা ৩৯ জন নার্স। নার্স সংকটে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ছেন নার্সরা নিজেরাই। কারণ তারা নাইট শিফট, মর্নিং শিফট করছেন। আমরা চেষ্টা করছি কিভাবে সংকট কাটিয়ে তোলা যায়। আমরা আশ্বাস পেয়েছি নার্সের সমস্যাটা সমাধান হবে।”

মুন্সীগঞ্জ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন প্রাণের দাবি, হবে কবে?

স্বাস্থ্যসেবা পাওয়ার নানা বৈষম্য আছে গ্রাম ও শহরে, আছে ধনী ও দরিদ্র শ্রেণিতে। মানুষের মৌলিক অধিকারের একটি হলো উপযুক্ত চিকিৎসাপ্রাপ্তি। চিকিৎসাসেবা দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে জনগণের দুয়ারে পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা থাকা সত্ত্বেও বাস্তবে তা সহজলভ্য হয়ে উঠছে না।

আধুনিক চিকিৎসার মূল কেন্দ্র হলো মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দেশ-বিদেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অধ্যাপকেরা শ্রেণিকক্ষে ছাত্রদের পাঠদানের পাশাপাশি হাসপাতালে ভর্তি করা রোগীদের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। বিকেলে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-সংলগ্ন এলাকায় প্রাইভেট ক্লিনিক বা চেম্বারে স্বল্প মূল্যে রোগীদের চিকিৎসা দেন। এমনকি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকে ভর্তি করা জটিল রোগীদের প্রয়োজনে ডাকলে রাতদিন ২৪ ঘণ্টা সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। এসব মেডিকেল কলেজ থেকে পাস করে নবীন চিকিৎসকেরা নিকটস্থ শহর-উপশহরে ক্লিনিক, হাসপাতাল গড়ে তুলে চিকিৎসাসেবা তৃণমূলে প্রসার ঘটাচ্ছেন।

দেখা যায়, যেসব জেলায় মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে, সেসব জেলার জনগণ আধুনিক চিকিৎসা গ্রহণের সব সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। পাশের জেলার অনেক রোগী এসব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। দূর-দূরান্ত থেকে রোগীরা চিকিৎসা নিতে গিয়ে যোগাযোগ, আসা-যাওয়া ও খাবারের জন্য নিঃস্ব হয়ে পড়ছেন।

মুন্সীগঞ্জে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল আছে। ২৫০ শয্যা নামে থাকলেও জনবল আছে সেই ১০০ শয্যারও কম। ডাক্তার ও নার্সসহ নানা সংকট এবং সমস্যায় জর্জরিত এই হাসপাতাল। এমতাবস্থায় জেলার ১৫ লাখ মানুষের জন্য আধুনিক চিকিৎসা সেবা দিবে মেডিকেল কলেজ স্থাপন এখন প্রাণের দাবি।

চলতি মাসের ৭ এপ্রিল সোমবার মুন্সীগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জেলার অবকাঠামোগত উন্নয়ন সংক্রান্ত আলোচনা সভা হয়। সভায় মুন্সীগঞ্জে একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপনের চেষ্টা চলছে বলে জানান স্বরাষ্ট্র ও কৃষি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি তাড়াতাড়ি এখানে (মুন্সীগঞ্জ) একটি মেডিকেল কলেজ করা যায় কি না। দু-এক মাসের মধ্যে কীভাবে কাজ শুরু করা যায়, এ জন্য আমরা চেষ্টা করছি।’ স্বরাষ্ট উপদেষ্টার এমন বক্তব্যে জেলা জুড়ে আশার আলো দেখতে থাকে চিকিৎসা সেবা প্রত্যাশী মানুষ। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। তাহলে কি হতে যাচ্ছে মেডিকেল কলেজ?

সর্বশেষ - মুন্সীগঞ্জ

আপনার জন্য নির্বাচিত

মুন্সীগঞ্জের আর কে টাওয়ারে হামলায় ক্ষোভ এলাকাবাসীর

এসএসসি ২০২৫: সদরে পাশের হারে সেরা ১০ স্কুল

মুন্সীগঞ্জে ৫ ইটভাটাকে ২৬ লাখ টাকা অর্থদণ্ড, ৩ জনের জেল

সারাদেশে ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু

সারাদেশে ডেঙ্গুতে ১৯ জনের মৃত্যু

মুন্সীগঞ্জে পূর্ব শিলমান্দি ওয়েলফেয়ার সোসাইটি প্রিমিয়ার ক্রিকেট লীগ উদ্বোধন

মুন্সীগঞ্জে এসএসসি পরীক্ষায় ফেল সাড়ে ৪ হাজার শিক্ষার্থী, জিপিএ-৫ পেয়েছে ৪৩৯

রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দিতে সালিশে হামলায় অর্ধশতাধীক মানুষের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের

লৌহজংয়ে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ভুল থাকলে ফ্রি সংশোধনের সময় দিচ্ছে

সিরাজদিখানে আন্তঃ ধর্মীয় সংলাপ অনুষ্ঠিত 

কুড়িগ্রামের উলিপুরে ৭দিন ব্যাপী বই মেলার উদ্বোধন