বৃহস্পতিবার , ২২ মে ২০২৫ | ৩১শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
  1. অন্যান্য
  2. অপরাধ
  3. অর্থনীতি
  4. আইন-আদালত
  5. আন্তর্জাতিক
  6. আরো
  7. এক্সক্লুসিভ নিউজ
  8. কলাম
  9. কৃষি
  10. খুলনা বিভাগ
  11. খেলাধুলা
  12. গজারিয়া
  13. গণমাধ্যম
  14. চট্টগ্রাম বিভাগ
  15. জাতীয়

ভালো কাজই আনে সম্মান

প্রতিবেদক
সভ্যতার আলো ডেস্ক
মে ২২, ২০২৫ ১১:১৪ পূর্বাহ্ণ

ফারুক আহমেদ
১. ভূমিকা:
আমরা সমাজে অনেক ধরনের মানুষ দেখি—কেউ মানুষের ভালো কাজ করে হয়ে ওঠে সম্মানিত; আবার কেউ খারাপ কাজ করে হয়ে ওঠে সমাজের মানুষের কাছে ঘৃণিত। ভালো কাজ কখনোই বৃথা যায় না। ভালো কাজ একদিন ঠিকই ফিরে আসে সম্মান, ভালোবাসা আর মানুষের দোয়া নিয়ে। ভালো কাজই পরিণত হয় একদিন ফুলের মালা!
ভালো কাজ মানে এমন কাজ যা মানুষের উপকারে আসে! ভালো কাজ শুধুমাত্র বড় বড় কোনো দান করা বা বড় বড় কোনো কর্ম নয়, বরং প্রতিদিনের ছোট ছোট কাজও, ভালো কাজের অন্তর্ভুক্ত। যে কাজ, মানুষের মুখে হাসি ফোটায়, মন থেকে দোয়া করতে ইচ্ছে করে সেটাই ভালো কাজ।
ভালো কাজ সম্পর্কে বিশ্ববিখ্যাত গুণীজনরা যা বলেছেন তা হলো:
• সক্রেটিস: “সত্য এবং ন্যায়ের পথে চলাটাই মানুষের আসল গুণ।”
• রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর: “সেবাই মানুষের প্রকৃত ধর্ম।”
• মহাত্মা গান্ধী: “তুমি পৃথিবীতে যা দেখতে চাও, প্রথমে তা নিজের ভেতরে সৃষ্টি করো।”
• হেলেন কেলার: “ভালো কাজ করার আনন্দের সঙ্গে কিছুই তুলনীয় নয়।”
• ইমাম গাজ্জালী: “সততা ও ভালো কাজ এমন এক আলো, যা অন্ধকারকে দূর করে দেয়।”
২. ভালো কাজের প্রভাব যেভাবে ব্যক্তি ও সমাজ জীবনে পড়ে:
ভালো কাজ মানুষকে আত্মবিশ্বাসী, সাহসী ও জনপ্রিয় করে তোলে। যে ভালো কাজ করে, মানুষকে ভালো কাজের পরামর্শ দেয়, সত্য ও ন্যায়ের পথে থাকে এবং অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়ায়। ভালো কাজ সমাজের মধ্যে কল্যাণ বয়ে আনে।
যারা ভালো কাজ করেন, তারা সমাজে সম্মান, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পায়। তাদের কথা মানুষ গুরুত্ব দিয়ে শোনে, তারা হয়ে ওঠে সমাজের পথপ্রদর্শক ও প্রেরণার উৎস। অনেক সময় বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন বা সমাজ তাদের পুরস্কার দেয়, এবং তারা হয়ে ওঠে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের আদর্শ ব্যক্তিত্ব, মানুষ তাদের কথা ও কর্মকে অনুসরণ করে।
৩. খারাপ কাজের প্রভাব যেভাবে ব্যক্তি ও পরিবার জীবনে পড়ে:
খারাপ কাজের শুরু হয় মিথ্যা কথা ও ওয়াদা ভঙ্গ করে, অন্যায় কাজ ও মানুষকে ঠকানো দিয়ে। দুর্নীতি, মানুষের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করা দিয়ে। এসব কাজ পরিবারে ও সমাজে অশান্তি ও বিবাদ সৃষ্টি করে! খারাপ কাজ একসময় ব্যক্তি ও পরিবারের জন্য লজ্জা ও দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়! কেউ তাদের বিশ্বাস করে না, এতে সবাই তাদের তিরস্কার ও ঘৃণা করে। তারা ধীরে ধীরে একাকী হয়ে পড়ে।
এই সব মানুষ ক্ষমতা আর টাকার বিনিময়ে, সমাজের বড় বড় মানুষ থেকে ক্ষণিকের জন্য কিছু সম্মান কুড়ালেও, প্রকৃতপক্ষে তারা সমাজে দুর্নীতিবাজ হিসাবেই মানুষের কাছে পরিচিতি পায়, হয় সমাজে ঘৃণিত ব্যক্তিত্ব! ইতিহাসও তাদের দুর্নীতিবাজ ও ঘৃণিত ব্যক্তি হিসাবেই লিপিবদ্ধ করে! মৃত্যুর পরও মানুষ তাদের নাম খারাপভাবেই উচ্চারিত করে!
খারাপ কাজ মানুষের মনের ভেতর একধরনের অপরাধবোধ ও অশান্তি সৃষ্টি করে! অনেক সময় তা ভয়ের কারণও হয়ে উঠে! যে মানুষটি খারাপ কাজ করে, এমনকি সে রাতে শান্তিতে ঘুমাতেও পারে না! বিবেক তাকে অনবরত দংশন করে। এমনকি সেই অশান্তি ও বিবেকের দংশন তার মধ্যে বড় ধরণের অসুখও নিয়ে আসতে পারে।
৪. ভালো কাজ কীভাবে মনের মাঝে আনন্দ ও প্রশান্তি আনে?
আমরা যখন কাউকে নিঃস্বার্থভাবে সাহায্য করি বা উপকার করি, তখন সেই মানুষটি খুশি হয় এবং তার মুখে হাসি ফুটে ওঠে। এই আনন্দ ও হাসিমুখ আমাদের মনেও এক ধরনের সুখের অনুভূতি তৈরি করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ভালো কাজের ফলে মস্তিষ্কে সুখদায়ক হরমোন (যেমন অক্সিটোসিন ও ডোপামিন) নিঃসরণ হয়, যা মানসিক চাপ কমায় ও আমাদের মনের মাঝে গভীর আনন্দ এনে দেয়। এই আনন্দ অনুভব থেকে আমরা আত্মার ভেতর একধরনের প্রশান্তি পাই। ভালো কাজ শুধু অন্যকে নয়, নিজেকেও আনন্দিত করে। সেই আত্মার শান্তিই হলো দুনিয়ার আসল সুখ।
৫. ভালো কাজের মর্যাদা ও প্রয়োজনীয়তা:
ভালো কাজ আমাদের আত্মাকে গঠন করে। তাদের মনের জোর বেড়ে যায়। যারা ভালো কাজ করে, তারা হয় সাহসী! ভালো মানুষ মানেই শক্তিশালী, সাহসী ও সচেতন মানুষ। যারা ভালো কাজ করে, তারা অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পায় না! তারা হয়ে উঠে সমাজের সবার প্রিয়ভাজন! ভালো কাজের মাধ্যমে আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারি, মানুষের দোয়া, ভালোবাসা ও সম্মান পেতে পারি। যারা ভালো কাজ করে, মৃত্যুর পরেও মানুষ তাদের শ্রদ্ধার সাথে স্মরণীয় করে! তার জন্য মানুষ দোয়া করে!
৬. খারাপ কাজ কেন বর্জনীয়:
খারাপ কাজ সাময়িক সফলতা ও আনন্দ দিলেও দীর্ঘমেয়াদে তা আমাদের ব্যক্তি, পরিবার ও সমাজকে ধ্বংস করে। এটি আত্মার শান্তি কেড়ে নেয়, মনের ভিতর অশান্তি ও ভীতির সৃষ্টি করে! খারাপ কাজ মানুষের চরিত্র ও ভবিষ্যৎ নষ্ট করে। তাই যত ছোটই হোক না কেন, খারাপ কাজ আমাদের সবার এবং সব সময় এড়িয়ে চলা উচিত।
৭. একটি শিক্ষণীয় গল্প: “সাগর আহমেদ ও ফটিক মিয়ার কর্ম”
ফুলতলা একটি ছোট ও শান্তিপূর্ণ গ্রাম। সেই গ্রামে বাস করতো এক সদা হাস্যোজ্জ্বল যুবক — তার নাম সাগর। সাগরের বয়স ছিল কম, কিন্তু তার মনটা ছিল অনেক উদার। সে সব সময়ই মানুষের উপকারে ঝাঁপিয়ে পড়ত। সাগরের এমন কর্মকাণ্ড দেখে সেই গ্রামের অনেক যুবক সাগরের সাথে হাত মিলায় এবং তারা সমাজে অনেক ভালো ভালো কাজ শুরু করে।
একদিন দুপুরবেলা সাগর স্কুল থেকে ফিরছিল। পথে দেখে, এক বৃদ্ধা মহিলা কাঁদতে কাঁদতে রাস্তার পাশে অজ্ঞান হয়ে পড়ে আছেন। কেউ তাকে সাহায্য করছে না। সাগর দ্রুত দৌড়ে গিয়ে সেই বৃদ্ধ মহিলাকে পাশের একটি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে! হাসপাতাল থেকে সুস্থ হওয়ার পর, সাগর সেই বৃদ্ধাকে তার গ্রামের বাড়িতে পৌঁছে দেয়।
বৃদ্ধা মহিলা সুস্থ হওয়ার পর, কাঁদতে কাঁদতে সে সাগরকে বলে—
বৃদ্ধা মহিলা: “বাবা, আমি তো ভেবেছিলাম মরেই যাবো। কিন্তু তুমি আমার বেঁচে থাকার আশীর্বাদ হয়ে সামনে আসলে! তুমি আমাকে আজ হাসপাতালে না নিয়ে গেলে আমি পৃথিবীর আলোর মুখ কোনো দিনই দেখতাম না!”
তারপর সেই বৃদ্ধা মহিলা হাত তুলে সাগরের জন্য অনেক দোয়া করে! বৃদ্ধা মহিলার দোয়া নিজ চোখে দেখে, সাগরের মন আনন্দে ভরে যায় এবং সে তার মনে অনেক আনন্দ অনুভব করে এবং মনে অনেক শান্তি অনুভব করে!
সে বৃদ্ধা মহিলাকে বলে —-
সাগর: “চাচী আপনি আমার জন্য দোয়া করবেন, আমি যেন প্রতিদিন একটি ভালো কাজ করতে পারি, এবং মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারি”।
সাগরের এই ঘটনাটি পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে! এতে সবাই সাগরের প্রশংসা করে এবং তাকে মানুষ অনেক সম্মান করতে থাকে! সাগরের এই ভালো কাজের খবরটি এলাকার চেয়ারম্যানের কানে পৌঁছে যায়! চেয়ারম্যান সাহেব গ্রামের একটি অনুষ্ঠানে সাগরকে ডেকে আনেন এবং তার হাতে একটি উপহার দিয়ে সবার সামনেই সাগরকে বলেন —-
চেয়ারম্যান: “সাগর তুমি আমাদের সমাজের গর্ব। আমরা গর্বিত, ফুলতলা গ্রামে তোমার মতো এমন একজন মানবিক যুবককে পেয়ে। আমি আশা করি তোমার এই ভালো কাজ দেখে আমাদের যুব সমাজও আরো বেশি করে ভালো কাজ করতে শিখবে এবং তোমাকে সবাই অনুসরণ করবে”!
গ্রামের এবং এলাকার সবার সামনে চেয়ারম্যান সাহেবের মুখ থেকে এমন সম্মানিত কথা শুনে সাগর খুব মুগ্ধ হয়! এবং সে মনে অনেক আনন্দ ও প্রশান্তি অনুভব করে। সাগর মনে মনে বলতে থাকে —- “গ্রামের প্রতিটি মানুষ যদি আমার মতো এমন ছোট ছোট ভালো কাজগুলো করত, তাহলে সত্যি গ্রামে কোনো দুঃখই থাকত না”! একই সাথে সাগর প্রতিজ্ঞা করে যে সে প্রতিদিন একটি করে ভালো কাজ করবে।
অন্যদিকে, একই গ্রামের ফটিক মিয়া ছিল এক চাতুর্যপূর্ণ ও অত্যন্ত লোভী ব্যক্তি। তিনি গরিবের জন্য বরাদ্দ সরকারি চাল নিজের গোডাউনে রেখে বাজারে বিক্রি করত। একই সাথে সে মানুষের অর্থ-সম্পদ, টাকা-পয়সা সুযোগ পেলেই আত্মসাৎ করত।
তার কাছে মনে হতো অর্থ আর সম্পদই হলো জীবনের সব কিছু! এমনকি সে মাঝে মাঝে গ্রামের মানুষকে বলত “মানি ইজ সেকেন্ড গড”!
সে আরো বলত “কে আছে এই গ্রামে আমার বিরুদ্ধে লড়বে – আমি এই গ্রামের কাউকেই পরোয়া করি না?” তার ছিল গ্রামের বড়ো সন্ত্রাসীদের সাথে সখ্যতা, যাদেরকে সে সব সময় ঘুষ দিয়ে তার হাতে রাখত। তাই গ্রামের কাউকেই সে পাত্তা দিত না এবং গ্রামের মানুষও তার বিরুদ্ধে কথা বলতে ভয় পেতো! সন্ত্রাসীদের শক্তির দাপটে ফটিক মিয়া নিজেকে পুরো গ্রামে সবচেয়ে বেশি শক্তিশালী মনে করত!
একদিন ফটিক মিয়ার প্রতারণা ধরা পড়ে যায়! তার বাড়িতে পুলিশ হানা দেয় এবং প্রশাসন তল্লাশি করে চুরি করা সরকারি চাল তার বাড়ি থেকে উদ্ধার করে! ফলে পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়! এতে ফটিককে জনসম্মুখে অপমানিত হতে হয়।
অন্যদিকে সে যাদের অর্থ ও সম্পদ আত্মসাৎ করে, তারাও তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করে দেয়। এতে পুরো গ্রামে ফটিক মিয়ার সব অপকর্ম (সরকারি চাল চুরি, মানুষের কাছ থেকে অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ) প্রকাশ পেয়ে যায়। মানুষ প্রকাশ্যে তার অপকর্মের কথা বলাবলি করে, তার সমালোচনা করে ও তাকে ঘৃণা করতে শুরু করে।
একদিন গ্রামের প্রতিবেশী রফিক নামে এক ব্যক্তি ফটিককে বলতে লাগল —
রফিক: “তুমি এতো লোভী না হলে আজ তোমার জায়গায় হতো সাগরের মতো। কিন্তু বর্তমানে পুরো গ্রাম ও সমাজ তোমাকে নয়, সাগরকেই ভালোবাসে এবং সম্মান করে। মানুষ সাগরকেই মনে রাখবে, তার ভালো কাজের জন্য। তুমি ক্ষমতার দাপটে ও লোভে পড়ে অনেক অন্যায় কাজ করেছ — সরকারি চাল চুরি করেছ, মানুষের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করেছ। গ্রামের সন্ত্রাসীদের তাদের কর্মকাণ্ডের জন্য কোনো দিন বাধা দাওনি। তুমি তোমার নাম ফুটানোর জন্য যতই মসজিদ-মাদ্রাসাতে দান করো না কেন, এবং প্রতি বছর মক্কায় ওমরা করতে যাও না কেন, তা কোনো কাজে আসবে না। তোমার অপকর্মের জন্য মানুষ তোমাকে ঘৃণাই করবে”!
রফিকের কথা শুনে, ফটিক অনেক অপমান বোধ করে এবং মুখ নিচু করে থাকে!
ফটিক মিয়া যখন বুঝতে পারে সে অনেক অন্যায় করেছে, তখন সে অনুতপ্ত হয় এবং পরের দিন সে সাগরের মায়ের কাছে এসে বলে —
ফটিক: “খালাম্মা, আসলে আমি আপনার ছেলেকে হিংসা করতাম, কিন্তু আজ বুঝলাম, সত্যিকারের সম্মান টাকা আর ক্ষমতা দিয়ে কেনা যায় না, সেটা কেবল ভালো কাজ দিয়েই অর্জিত হয়।”
সাগরের মা ফটিককে বলে —
“তুমি যাদের সাথে এতদিন খারাপ আচরণ করেছ, যাদের সাথে অন্যায় করেছ, তাদের সবার কাছে ক্ষমা চাও! একই সাথে তুমি যাদের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করেছ, তাদের সব ফিরিয়েও দাও এবং তাদের কাছে ক্ষমা চাও! এতে হয়তো তুমি মানুষের কাছ থেকেও আল্লাহর কাছ থেকেও ক্ষমা পেতে পারো এবং তোমার সম্মান কিছুটা হলেও ফিরে পাবে”!
জবাবে ফটিক কেঁদে কেঁদে সাগরের মাকে বলে —
“হ্যাঁ খালাম্মা, আমি জীবনে অনেক অন্যায় করেছি, আমি মানুষকে অনেক কষ্ট দিয়েছি। অর্থ ও সম্পদের লোভ আমাকে অমানুষ বানিয়ে ফেলেছিল! সেই দাপটে আমি নিজেকে কত কিছুই না মনে করতাম। অর্থ আর ক্ষমতার কারণে আমি মানুষকে গোনায় ধরতাম না, এমনকি আপন ভাই-বোনদেরও না, আমি তাদের সবার অনেক চোখের জল ফেলেছি। আমার ওসব অন্যায় কাজই আজ আমার অশান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমি এখন রাতে শান্তিমতো ঘুমাতেও পারি না! আমার বিবেকই আমাকে শাস্তি দিচ্ছে! আমি আপনার নিকট ওয়াদা করছি, আপনি যা যা বলেছেন আমি তাই করব। আমি যাদের কষ্ট দিয়েছি, তাদের কাছে ক্ষমা চাইব, যাদের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ করেছি, তাদের তা সব ফিরিয়ে দেব ও তাদের কাছেও ক্ষমা চাইব। আমার কোনো অর্থ-সম্পদ দরকার নেই, আমি মানুষের সম্মান ও ভালোবাসা চাই”!
ফটিক কেঁদে কেঁদে এইসব কথা বলতে গিয়ে হঠাৎ করে সেন্সলেস হয়ে সাগরের ঘরে লুটিয়ে পড়ল ….!
৮. উপসংহার:
আমরা সবাই চাই সমাজে সম্মান, ভালোবাসা এবং প্রশান্তি পেতে। কিন্তু এই সম্মান ও ভালোবাসা কখনোই টাকার বিনিময়ে কেনা যায় না—এটি অর্জন করতে হয় সততা এবং ভালো কাজের মাধ্যমে।
ছোট ছোট ভালো কাজ আমাদের জীবনকে করে তোলে অর্থবহ, সমাজকে করে তোলে সুন্দর ও শান্তিময়। “দেশজুড়ে মহামানব হওয়ার প্রয়োজন নেই, নিজের পরিবারে ও নিজ সমাজে ভালো মানুষ হও”। তবেই পারবে মানুষের মুখে হাসি ফুটাতে এবং নিজের আত্মার সুখ পেতে। এই আত্মার সুখই দুনিয়ার স্বর্গ!
গল্পে সাগরের মতো একজন যুবক আমাদের শেখায়—একটি ছোট উপকার, একটি আন্তরিক সাহায্য বা একজন বিপদগ্রস্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই হলো সত্যিকারের ভালো কাজ, যা হতে পারে একজন সত্যিকারের মানুষ হয়ে ওঠার জন্য মহৎ কাজ।
অন্যদিকে ফটিকের মতো মানুষদের জীবন আমাদের সতর্ক করে দেয়—লোভ, লালসা, প্রতারণা, মানুষের অর্থ-সম্পদ আত্মসাৎ এবং এই ধরণের অন্যায় কাজগুলো মানুষ যতই ঢেকে রাখুক না কেন, তা একদিন প্রকাশ পাবেই, এবং সেই অন্যায়ের জন্য তাকে একদিন মূল্য দিতে হবে মানুষের কাছ থেকে অপমান ও ঘৃণার মাধ্যমে।
তাই আসুন, আমরা সবাই নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিদিন অন্তত একটি ভালো কাজ করার চেষ্টা করি। মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে পারাই হোক আমাদের জীবনের জন্য একটি বড় অর্জন, হোক ভালো কাজের বড়ো নিদর্শন।
নতুন বাংলাদেশে আমাদের পরিবার, সমাজ এবং জাতিকে এগিয়ে নিতে হলে আমাদের একান্ত প্রয়োজন — ভালো মানুষ হওয়া ও ভালো কাজ করা! আর ভালো মানুষ হওয়া মানেই প্রতিদিন নিজের বিবেককে প্রশ্ন করা —
“আজ আমি কোনো অন্যায় করছি কি? এবং আজ আমি একটি ভালো কাজ করে, কারো উপকারে এসেছি কি?”
-সমাপ্ত-
লেখক: কলামিস্ট ও সমাজ উন্নয়ন কর্মী

সর্বশেষ - মুন্সীগঞ্জ