শান্তির পায়ে পায়ে
সুস্নাত বন্দ্যোপাধ্যায়
(হাবড়া, উত্তর-২৪-পরগনা, পশ্চিমবঙ্গ,
ভারতবর্ষ)
আপন মনে সে সাহারার নিশ্চিন্ত উটের মত হেঁটে চলে।
না কোনো হাহাকার, না দীর্ঘশ্বাস;
তার চোখে মেঘ নেই, কেবল ধুলোর স্নিগ্ধতা।
(প্রথম স্তবক)
পাখিরা দেখেও না তাকায় তার দিকে—–এমনই নীরবতা তার শরীরে, যেন সে প্রকৃতিরই এক ক্ষয়িষ্ণু তরঙ্গ, সময়ে গড়িয়ে আসা কোনো পুরোনো পাথর।
(দ্বিতীয় স্তবক)
সে জানে, এই হেঁটে চলার শেষ প্রান্তে আছে এক শয্যা, |
যেখানে রক্ত মিশেছে লবণের জল আর কামানের শব্দে,
আর এক অস্থির যুবক—-
যার ঠোঁটে এখনও সমুদ্রের স্বাদ, ধীরে ধীরে নিঃশেষিত হচ্ছে।
(তৃতীয় স্তবক)
কিন্তু সে কাঁদে না,
সে দুঃখকে নদীর মত বইতে শিখিয়েছে,
না বন্যা করে, না শুকিয়ে ফেলে মাঠ!!
তাই তার নিস্তব্ধ শান্তিকে কেড়ে নিতে চায়, জীবনের তুচ্ছ বাসনার চাঞ্চল্যে অশান্ত তরুণ-তরুণী,
হিংসার সংকীর্ণ অধৈর্য ব্যস্ততা তার নীরবতার প্রতি নিক্ষেপ করে।
তবু সেই তরুণ-তরুণীরা বারবার তার শান্তির কাছে হয় পরাজিত।
(চতুর্থ স্তবক)
তবু তার নীরবতা থেকে থেকে বলে—–
ধ্বংসের অন্তিম মুহূর্তের মত সে বলে না কিছুই, “মৃত্যুর গলা জড়ালেই আমি পাই চিরসুখ
((পঞ্চম স্তবক))
বটের ছায়া পড়ে তার চলন-ভঙ্গিতে—-
সেখানেও অনুপস্থিতির উপস্থিতি, যন্ত্রণা যা অশ্রু চায় না, শুধু চায় স্থান, চায় শূন্যতা। তার যাত্রা কোনো গন্তব্যে নয়,
সে চলেছে দেখা করতে নিজের সাথে নিজেই—-এক বৃদ্ধ, এক পিতা,এক পাথরের আলোড়িত পাঁজর।
(ষষ্ঠ স্তবক)
জীবন তার কাছে আর যুদ্ধ নয়,
একটি সন্ধ্যা মাত্র—-যেখানে মৃতেরা ফেরে না, তবু থাকে ঘরের পাশে ধূপের গন্ধে, বাতাসের থেমে যাওয়ায়।
(শেষ স্তবক)