স্টাফ রিপোর্টার: ফল ও ফুলের মাস বসন্ত। প্রকৃতির রূপ সজ্জার এমাসে পরিবেশ ও প্রকৃতি অনিন্দ্য সৌন্দর্য ধারণ করে। ফুল ও ফলে ভরে উঠে গ্রামের গাছপালায়।
কাঠালের উৎপত্তি ভারতীয় উপমহাদেশ হলেও এটি বাংলাদেশের জাতীয় ফল। কাঁঠাল গ্রীস্ম মৌসুমের একটি জনপ্রিয় ফল হলেও মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া উপজেলায় গাছে গাছে ঝুলছে কাঁঠাল।
মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া, লৌহজং, সিরাজদিখান,শ্রীনগর, উপজেলার এলাকায় কাঁঠাল গাছগুলোতে ধরেছে প্রচুর কাঁঠাল। অন্যআন্য বছরের তুলনায় চলতি বছরে ফলন বেশি হয়েছে। কাঁঠাল ফল ঝুলছে সৌন্দর্য বাড়াচ্ছে গাছগুলোতে। কাঁঠাল কিন্তু তেমন ফেলনা কোন ফল নয় পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ একটি ফল হলো কাঁঠাল। এর সবই খাওয়া যায়। এছাড়া কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা দুভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা কাঁঠাল বা এচোড় তরকারি হিসেবে উপাদেয়।
কাঁঠালে প্রচুর শর্করা ও ক্যালশিয়াম থাকে। কাঁঠালের বীজও আমাদের খাবারের অন্তর্ভুক্ত। পাকা কাঁঠালে ক্যারোটিন রয়েছে। আপেল, কমলার চাইতে কাঁঠালের খাদ্য মান অনেক বেশী। কাঁঠালে আশঁ, ভিটামিন ‘এ’অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন-সি ভিটামিন-বি, ভিটামিন-বি-৬, ভিটামিন-ই, ক্যালসিয়াম, ফলিক এসিড রয়েছে। টাটকা ফলে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, এবং লোহার (আয়রনের) একটি ভাল উৎস। টাশিয়াম হার্টের গতি ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। কাঁঠালের কোনো অনুমোদিত জাত নেই। তবে তিন ধরণের কাঁঠাল চাষ হয় বাংলাদেশে-খাজা, আদারসা ও গালা। কিন্তু বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ২টি জাত- বারি কাঁঠাল-১ (২০০৮) এবং বারি কাঁঠাল-২ (২০১০) রিলিজ করলে এখনো প্রসার ঘটেনি। কৃষিবিজ্ঞানীরা কাঁঠালকে মাল্টিপারপাস উদ্ভিদ বলে থাকেন, কারন- ফল হিসেবে পাকা অবস্থায়, সবজি/তরকারী হিসেবে কাঁচা অবস্থায় কাঁঠাল খুব সুস্বাদু খাবার। এছাড়া এ ফলটির অবশিষ্ঠাংশ পশু খাদ্য হিসেবে ব্যাবহার হয়।
এছাড়া গ্রামের মেয়েরা কচি কাঁঠালের(মুচি) অপুক্ত কাঁঠাল খোঁসা ছাড়িয়ে কুচি কুচি করে কেটে সাথে তেঁতুল দিয়ে ভর্তা করে খায়। কাঁঠালের বীজ প্রোটিন সমৃদ্ধ এবং পুষ্টিকর খাবার। গর্ভবতী মায়েদের জন্য এই ফল খুবই কার্যকরী। তাছাড়া মৌসুম ভিত্তিক এই ফল সবাই খেতে পারেন। তবে গর্ভবস্থায় গর্ভবতী মায়ের যেহেতু আয়রন ও ক্যালসিয়াম, ভিটামিন‘এ, ভিটামিন-বি, ঘাটতি দেখা দেয়। সেই কারণে এই সময়ে মায়েরা বেশি পরিমানে কাঁচা কাঁঠালের তরকারি খেয়ে আয়রনে ঘাটতি পূরণ করতে পারেন অতি সহজেই।
পাকা কাঁঠালে প্রচুর আঁশ রয়েছে ফলে পাকা কাঁঠাল খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া থেকে রক্ষা পেতে পারেন। কাঁঠালের পাতা পশু খাদ্য হিসেবে ব্যাবহার হয়। পাতা ছাগলের প্রিয় খাবার আর মোথা গরুর। (ছাগলের প্রাধান খাদ্য)। কাঁঠাল কাঠ দিয়ে নানা ধরণের ফার্ণিচার তৈরি করা হয়। যেমন খাট, ওয়াটড্রপ, আলনা, সোফা, ঘরের দরজা ইত্যাদি।
উপজেলার ফল প্রিয়দের ধারণা এই বছর আম ও কাঁঠালের ভালো ফলন হয়েছে প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে চাহিদা মিটিয়ে বিক্রি করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন উপজেলাবাসী।