বেশ কিছুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রে গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল। চলতি মাসেই যার ঘোষণা আসবে বলে নিশ্চিত করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এবং নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তে গঠিত নাগরিক কমিটি। কিন্তু এর আগেই আত্মপ্রকাশ ঘটছে ছাত্র সংগঠনের।
এরইমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করে নতুন ছাত্র সংগঠনের ঘোষণা দিয়েছেন সমন্বয়করা। প্রাথমিকভাবে বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) আত্মপ্রকাশের দিনক্ষণ ঠিক থাকলেও কিছুটা পিছিয়ে আগামী সপ্তাহের শুরুতে আসতে পারে ঘোষণা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিন থেকে শুরু হতে পারে সংগঠনটির পথচলা।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন সমন্বয়করা বলছেন, সংগঠনটির মূল নেতৃত্বের বেশিরভাগই যাচ্ছেন মূল রাজনৈতিক দলে। আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ পেতে পারেন দলের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। যারা মূল দলে যাবেন না, ছাত্র সংগঠনের হাল ধরবেন তারাই।
জানা গেছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে নেতৃত্ব দিয়ে আলোচনায় আসা সমন্বয়ক আবু বাকের মজুমদার ও দফতর সম্পাদক জাহিদ আহসান আসতে পারেন ছাত্র সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে। সমন্বয়ক আব্দুল কাদের পেতে পারেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের দায়িত্ব। এ ছাড়া সমন্বয়ক রিফাত রশীদ, হাসিব আল ইসলামসহ অন্যদের দেখা যেতে পারে নতুন এই ছাত্র সংগঠনের দায়িত্বে।
সে ক্ষেত্রে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও আসতে পারে নতুন নেতৃত্ব। জুলাই গণ-অভ্যুত্থানবিষয়ক সেলপ্রধান হাসান ইনাম পেতে পারেন প্রধানের দায়িত্ব। এ ছাড়াও সরাসরি রাজনীতি করতে আগ্রহী নন, এমন শিক্ষার্থীরা থাকবেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের বাইরে জুলাইয়ের চেতনাকে ধারণ করে সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ড করবে সংগঠনটি।
এ ব্যাপারে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের বলছেন, ছাত্র রাজনীতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের বিরূপ ধারণা পরিবর্তন করতে চান তারা। সে কারণেই হল এবং একাডেমিক এরিয়ায় কমিটি বা কোনো কর্মকাণ্ড থাকবে না দলটির। লক্ষ্য, মধ্যপন্থি ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির।
তিনি বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন মাদার পার্টি দ্বারা নির্বাচিত হয়, তখন ছাত্র অধিকারের ব্যাপারে তার কোনো দায়বদ্ধতা থাকে না। ছাত্রদের যে কাঠামো আছে তার পরিবর্তন আনতে হবে। কারণ, তারা চায় না হলে এবং একাডেমিক এরিয়ায় রাজনীতি ঢুকে গিয়ে দাসত্বের শৃঙ্খলা সেখানে ফিরে আসুক।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলছেন, ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্তের ভিত্তিতেই গঠিত হতে যাচ্ছে নতুন ছাত্র সংগঠন। একই প্ল্যাটফর্ম থেকে বের হয়ে মূল দল এবং ছাত্র সংগঠন হলেও ছাত্র সংগঠন থাকবে স্বতন্ত্র।
তিনি বলেন, উদীয়মান যেসব ছাত্রনেতা আছেন, যারা গণ-অভ্যুত্থানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন, তাদের নেতৃত্বে একটা ছাত্র সংগঠন তৈরি হচ্ছে। ছাত্র সংগঠনটির খুবই গুরুত্বপূর্ণ ফিচার (বৈশিষ্ট্য) হচ্ছে এটা লেজুড়বৃত্তিক হবে না।
উদ্যোক্তারা বলছেন, ছাত্র সংসদ নির্বাচনের দাবিতে কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কার্যক্রম শুরু করবে নতুন এই ছাত্র সংগঠনটি। এ ছাড়াও জুলাই গণ-অভ্যুত্থানকে ধারণ করে ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে দেশব্যাপী বিস্তৃতি বাড়ানোর পরিকল্পনা তাদের।
